নাজমুল হুদা:
নির্বাচনের আমেজ শুরু হতে না হতেই কক্সবাজারে ৭১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর ভীড় পড়েছে। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না বলে একজন অপরজনের কাছে অভিযোগ।
প্রতীক পেলেই নির্বাচিত হবেন এমন প্রত্যাশা নিয়ে জেলাব্যাপী প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর হিড়িক পড়েছে। নিজের জনপ্রিয়তা কতটুকু আছে তা যাচাই না করেই অনেকেই জোর তৎপরতা শুরু করেছেন। একটি ইউনিয়নে এক ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশীও রয়েছেন। কক্সবাজার সরকারি কলেজের একজন সহযোগী অধ্যাপক নাম প্রকাশ না
করার শর্তে জানিয়েছেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে দলের নেতাকর্মীদের মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে যেভাবে হিড়িক পড়েছে তা কোন ভাবেই কাম্য নয়।
যারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তাঁরা মুলত কতটুকু জনপ্রিয় নিজেই উপলব্ধি করতে পারেন। জনপ্রিয়তা না থাকলে প্রতীক পেলেই যে নির্বাচিত হবেন এমন মানসিকতা পরিহার করতে হবে। তাই দলের মনোনয়নের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তাকে অগ্রাধিকার দিলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতনা। মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যাও অনেক কমে যেত। অনেকেই দলীয় মনোনয়ন পেলে কারো উপর নির্ভরশীল হয়ে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা করছেন। এটি গণতন্ত্রের চর্চার ঠিক বিপরীত। দলের মনোনয়ন ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা ও শিক্ষাগত যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। তখনই যোগ্য প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
একটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিউল আলম জানিয়েছেন, যেভাবে মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে এতে দলের তৃণমুল পর্যায়ে বিভাজন অনিবার্য হয়ে উঠবে। বর্তমানে প্রতিটি ইউনিয়নে যেভাবে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা একজন আরেকজনকে ছাড় না দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে গনসংযোগ করে যাচ্ছেন এতে ইতোমধ্যেই বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তিতে এই বিভাজন তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। তাই এখনই বিষয়টি শীর্ষনেতাদের নজরে আনা প্রয়োজন।
কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মত ক্ষমতায় রয়েছে। যার ফলে মনোনয়ন পেলে সহজেই বিজয়ী হবেন এমন প্রত্যাশা করছেন অনেকেই। এদের নেতিবাচক প্রচারণার কারণে মানুষ ভোট বিমুখ হয়ে পড়েছে। নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে আসছে না। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমন অবস্থা মানুষ দেখেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে কম এসেছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের গণসংযোগের নামে নেতিবাচক প্রচারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।