নিউজ ডেস্কঃ
ইতালি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সাথে সরকারীভাবে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। বর্তমানে ইতালিতে প্রায় ২,৪৫,০০০ হাজার বাংলাদেশী রয়েছে। ২০২২ সাল পর্যন্ত দ্বিপাক্ষীক বাণিজ্যের মোট পরিমাণ দাড়িয়েছে ২.২৮৬ বিলিয়ন ডলার যার মধ্যে ইতালিতে বাংলাদেশের রপ্তানী হয়েছে ১.০৩৬ বিলিয়ন ডলার। ইতালিতে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানী আইটেমের মধ্যে আছে হিমায়িত খাদ্য, কৃষি পণ্য, চা, চামড়া, কাঁচা পাট, পাটের পণ্য, নিট ওয়্যার সামগ্রী, তৈরী পোষাক ইত্যাদি প্রধান। ইতালি থেকে প্রধান আমদানী পণ্যগুলো হচ্ছে মেশিনারী, ইলেকট্রনিক পণ্য যানবাহন, বিমান, জাহাজ এবং সংশ্লিষ্ট পরিবহণ সরঞ্জাম, বাংলাদেশী প্রবাসীদের জন্য ইতালি হচ্ছে খুবই সম্ভাবনাময় একটি রাষ্ট্র। কোভিড সময় কালের পরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইতালি সফরের মাধ্যমে কৃষি/ সিজনাল ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশীদের জন্য ইতালি যাওয়ার পথ উম্মুক্ত হয়, যা ২০১২ সাল থেকে বন্ধ ছিল। এই প্রক্রিয়ায় ২০২১, ২০২২, ২০২৩ সালে লক্ষাধিক বাংলাদেশী সেখানে যাওয়ার সুযোগ পায় যা মূলত দেশের জন্য এক উপকারী বিষয় ছিল। ইইউ ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বাংলাদেশী ইতালিতে বসবাস করে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাংলাদেশীরা থাকেন ফ্রান্সে এবং তৃতীয় প্রধান দেশ হচ্ছে স্পেন। ইতালি থেকে যে সব দেশে অভিবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। ইতালি থেকে পাঠানো মোট রেমিট্যান্স-এর ১৫ শতাংশ যায় বাংলাদেশে। ৯০ এর দশকে ইতালিতে আসা বাংলাদেশী অভিবাসীরা মূলত দুইটি প্রধান ধারায় বিভক্ত ছিলেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম একদল উচ্চ শিক্ষিত ও দক্ষ তরুণ এবং একক পুরুষ অভিবাসী। তারা নিজেদের সামাজিক মর্যাদা ও উন্নত জীবন যাপনের জন্য ইতালিতে আসতে শুরু করেন। অপরভাগে ছিরেন অদক্ষ একক পুরুষ অভিবাসীরা, যারা কোন একটি কাজের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে দেশে থাকা নিজেদের পরিবারের খরচ যোগান দেওয়ার লক্ষ্যে ইতালিতে আসতে শুরু করেন।
২০২৫ সালের মধ্যে ইতালির বর্তমান সরকার ৪,৫২,০০০ স্পন্সর ভিসার মাধ্যমে লোক নিবে। ২০২৪ সালে কোটা নির্বাচিত হয় ১,৫২,০০০। ১৮ই মার্চ ছিল ইতালির ভিসা সার্বমিশনের লাস্ট ডেইট, যা ক্লিক ডে হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাংলাদেশ থেকে লাল লাখ তরুন তরুণী ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্লিক করে ইতালির ভিসা আবেদন করছে।
২১ মার্চ ছিল বাসা বাড়ীতে ডমেষ্টিক কাজের জন্য ভিসা আবেদন জমা করা। ২৫ মার্চ শুরু হবে কৃষি বা সিজনাল স্পন্সর এর ক্লিক ডে। এই দিনও লাখ লাখ তরুণ তরুণী তাদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ভিসা আবেদন করার জন্য ইন্টারনেটে ক্লিক করবে।
এখানে সব চাইতে যেটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো এই ভিসা সাবমিটের কাজ গুলো কোন দক্ষ গ্লোবাল এজেন্টের মাধ্যমে সাবমিট করা। প্রসঙ্গত অনুমতি পত্রের প্রেক্ষিতে ভিসা এর আবেদনের বিষয়টি VFS Global নামক প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা করে থাকে। বিশেষ সূত্রে আরো জানা যায়, বর্তমানে VFS কর্তৃপক্ষ যে সংখ্যার আবেদন (Appointment Slot) আবেদন পত্র জমা নিচ্ছে তা একেবারেই অপ্রতুল। ফলে Appointment বিষয়ে কৃত্রিম সংকট শুরু হয়েছে। যার সুবিধা এক শ্রেনীর অসাধু চক্র নিচ্ছে এবং এতে করে ইচ্ছুক ইতালী যাত্রীগন হয়রানি এবং প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এ বিষয়ে VFS Global কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিপাত ও পদক্ষেপ প্রয়োজন।
এখানে উল্লেখ্য বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক বা লোক কোন অভিজ্ঞতা ছাড়া ইতালি গিয়ে কষ্ট পায়, কারণ ওই সব লোকেরা কাজ জানে না এবং কাজের অভিজ্ঞতা কম। কিন্তু এদিকে যারা ইতালির এম্বেসির অনুমোদন নিয়ে কাজ করেন তারা নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে যে, যে কাজে পারদর্শী সে কাজের জন্য ভিসা দেয়। ভিসা সাবমিটের পেশাদার হওয়াই অনুমোদিত গ্লোবাল এজেন্টরা সঠিক নিয়মে ভিসার আবেদন করতে পারে। এর ফলে ভিসা আবেদনকারীদের ভিসা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বেশী থাকে। এক্ষেত্রে ইটালির এম্বেসীর অনুমোদিত অন্যতম নিস্টেড এজেন্ট VFS Global এর সহযোগিতা নিলে ইটালির ভিসা প্রাপ্তি সহজ ও নিরাপদ হবে এবং ভিসা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বেশি থাকবে। এই ক্ষেত্রে VFS Global এর দৃষ্টি আকষর্ণ করছি। লাখ লাখ তরুণ তরুণীর স্বপ্ন পূরণে VFS Global যথাযথ পদক্ষেপ নিবে বলে আশা রাখি। আমরা VFS Global এর সাথে আগে যারা কাজ করেছে তাদের সাথে কথা বলে জেনেছি আগে যখন VFS Global এর মাধ্যমে যারা আবেদন করেছিল তাদের ভিসা প্রাপ্তির নিশ্চিয়তা অনেক বেশি ছিল।
আমাদের এখন মূল সমস্যা হচ্ছে VFS Global পর্যাপ্ত পরিমাণে এপয়েন্টমেন্ট স্লট ছাড়ছে না। এর ফলে প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আবেদনকারীরা ইতালির ভিসার জন্য আবেদন করতে পারছে না। মাসের পর মাস আবেদন করতে গলদঘর্ম হচ্ছে পাবলিকেরা এর থেকে পরিত্রাণ পেতে রাজপথে ক্ষোভ প্রকাশ করে। ইতালি এম্বেসির প্রতি আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন VFS Global কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে, এর ফলে আবেদন কারীদের স্বপ্ন পুরণ হবে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দ্রুতগতিতে ত্বরান্বিত হবে।