বাংলা টুডেঃ
বাঁশখালী সরলে আবুল কালাম হত্যা মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিকে ষড়যন্ত্রমূলক প্রধান আসামি করার অভিযোগে এবং উক্ত মামলা সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রধান আসামিকে মিথ্যা অভিযোগ থেকে অব্যাহতির জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের নিমিত্তে সংবাদ সম্মেলন করেছে অভিযুক্ত নূর মোহাম্মদের পরিবার। ২৫শে আগষ্ট (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নূর মোহাম্মদের স্ত্রী কামরুন্নাহার। তিনি বলেন আমার স্বামী একজন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। এলাকায় উনার অনেক সুনাম রয়েছে। কিন্তু আমার স্বামী সম্পদশালী হওয়ায় এলাকার সন্ত্রাসীরা উনার সম্পদ জবরদখল করার জন্য দীর্ঘদিন যাবত উনাকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর পাঁয়তারা করে আসতেছিল।
তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ১৪ই এপ্রিল রাতে জাফর ডাকাত তার
ঘনিষ্ঠ সহচর আবুল কালামকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে ১নং ওয়ার্ডের মাঝের পাড়া নামক এলাকায় গুলি করে হত্যা করে লাশটি ২ নং ওয়ার্ডে নিহতের ভাই আবুল হাছানের ফার্মেসীর সামনে রেখে সকাল বেলায় জাফর এবং তার লোকেরা প্রচার করতে থাকে যে, আমার স্বামী এই হত্যায় জড়িত। ১৭ই এপ্রিল জাফর নিহতের ভাই আবুল হাছানকে বাদী করে আমার স্বামীকে প্রধান আসামি করে মোট ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায়। এই মামলার বেশীরভাগ আসামির সাথে জাফর মেম্বারের পূর্ব শত্রুতা ছিল।
২০১৯ সালের ২১শে জুন জাফর মেম্বার এবং তার ভাই খলিল র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর জাফরের ছেলে মোর্শেদ এবং ভাতিজা ইস্কান্দারসহ সন্ত্রাসী এবং ভূমিদস্যুরা “সরল সন্ত্রাসমুক্ত চাই” নামক একটি পেজ থেকে আমার স্বামী নূর মোহাম্মদকে অস্ত্রবাজ, মানব পাচারকারী,সন্ত্রাসী বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যার কারণে তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
এরপর থেকে মৃত জাফরের ছেলে মোর্শেদ তার দলীয় লোকজন নিয়ে হুমকি দিচ্ছে যে, আমার স্বামীকে যদি প্রশাসন হত্যা বা আটক না করে তাহলে তারাই মেরে ফেলবে। হুমকীর কারণে আমি বাঁশখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি, যার নং ১২৮১।
প্রতিনিয়ত তাদের এমন হুমকী ধমকীর কারণে আমাদের স্বাভাবিক জীবন বিপন্ন হচ্ছে। আমার ২ সন্তানের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে।
এরই মধ্যে তারা আমার স্বামীর ছবিসহ ব্যানার ছাপিয়ে আমার স্বামীর ফাঁসির দাবি জানিয়ে এলাকায় মানববন্ধন করে আইন বহির্ভূত কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। যা নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করতেছে।
প্রশাসনের নিকট আমার বিনীত অনুরোধ, আবুল কালাম হত্যা মামলাটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হবে এবং আমার স্বামী সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। বিশেষ করে ১নং ওয়ার্ডের মাঝের পাড়ায় আবুল কালামকে হত্যার পর তার মৃতদেহ ঘটনা সাজাতে ২নং ওয়ার্ডে যেই সিএনজিতে নেওয়া হয় সেই সিএনজির চালক ইছহাককে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু মামলায় স্বাক্ষীদের মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ স্বাক্ষীর নাম নেই কেন সেটা সবারই জানা।
উল্লেখ্য যে, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী সিএনজি চালক ইছহাক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আমি যা দেখেছি তা মিডিয়া এবং পুলিশকে জানিয়েছি, যেখানে গিয়ে বলতে হয় বলবো। আমি কাউকে ভয় করি না। যা সত্য তা সবসময় বলবো। ঘটনার তারিখে রাত ২.৩০ টার সময় জাফর মেম্বার
আমার সিএনজি করে সরল বাজার থেকে কালামসহ আরো ৩ জনকে সাথে নিয়ে ১নং ওয়ার্ডের মাঝের পাড়ায় গিয়ে সেখানে আনুমানিক ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে সবাইকে নিয়ে আবার সিএনজিতে ওঠে। সিএনজি একটু চলার পরে কে বা কারা কালামকে গুলি করে আমি দেখিনি। তখন জাফর বলে যে, লাশ কালামের বাড়ীতে পৌঁছে দিতে। পরদিন সকালে লোকজনকে বলাবলি করতে শুনি কালামকে ২নং ওয়ার্ডের একটি ঔষধের দোকানের সামনে নূর মোহাম্মদ এবং তার লোকজন হত্যা করেছে। এসব শুনে আমি হতবাক হয়ে যাই। এখন আমি চাই কালাম হত্যার সঠিক তদন্ত এবং বিচার হউক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নূর মোহাম্মদের স্ত্রী কামরুন্নাহার, ২ ছেলে শহীদুল ইসলাম ও শোয়াইবুল ইসলাম, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী সিএনজি চালক ইছহাক, প্রতিবেশী মো. ছাবের, মো.ইদ্রিস, মো.নূরুল ইসলাম এবং মো.হারুন।