নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মালিকানা জায়গায় লাগিয়েছে সরকারি দপ্তরের চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগ ফরেস্ট রেঞ্জার কর্মকর্তা কালুরঘাট দিপোর সাইনবোর্ড।দীর্ঘ ৯ বছর মহামান্য আদালতের মামলার রায়ের চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হঠাৎ মালিকানা জায়গায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে বেআইনিভাবে দখলের অভিযোগ উঠেছে ফরেস্টার নাজমুলের বিরুদ্ধে। জায়গার মালিক রাজমিস্ত্রি বেলায়েত হোসেনের পরিবার-স্বজনরা প্রাপ্ত জায়গার অধিকার ফিরে পেতে চরমভাবে ভোগ করতে হচ্ছে একের পর এক নির্যাতন। মামলা-হামলা সহ অনিয়মে জড়িয়ে নানাভাবে হয়রানি,হুমকি এবং আগ্রাসানের স্বীকার ভুক্তভোগী বেলায়েতের পরিবার।
মালিকানা সম্পদের জেরে উক্ত ঘটনা ছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন অনিয়মের কারণে ফরেস্টার নাজমুলের ফাঁদে নিরীহ জনসাধারণ।রাজমিস্ত্রি বেলায়েত হোসেনের নিজ মালিকানা সম্পদের জেরে ফরেস্টার কর্মকর্তা নাজমুলের কুনজরে এবং ফাঁদে ভুক্তভোগী ও জনসাধারণ। বাস্তবতা হচ্ছে মামলা-হামলা এবং আইনি জটিলতার ফাঁক ফোঁকরে হেনেস্তার স্বীকার। ভুক্তভোগীরা সমাধানের নিমিত্তে এখনো ঘুরছে সংশ্লিপ্ত দপ্তরের দ্বারে দ্বারে। সমাধানের জায়গায় সমস্যা যেন বাড়ছে প্রতিনিয়ত নিত্য নতুনভাবে।।
ভুক্তভোগী রাজমিস্ত্রির পরিবার অর্থ ক্ষমতাহীন সাধারণ হওয়ায় ভাগে-ভোগের পরিবর্তে উল্টো অন্যায় অপরাধে জড়িয়ে সরকারি সম্পত্তি দখলের অভিযোগে উল্টো উপযুক্ত হলেন।
ক্ষতি হচ্ছে আর্থিক, মানসিক এবং শারীরিক।
সরকারি সম্পত্তির দখলের অভিযোগে উপযুক্ত হয়ে দিশাহারা ভুক্তভোগীরা। রাজমিস্ত্রি বেলায়েত হোসেন তার শ্রম ও মেহনতের টাকায় প্রকৃত প্রাপ্য সম্পত্তি ফিরে পাইনি। মালিকানাসত্ত্ব জায়গার শতভাগ নিশ্চিত থাকা সত্ত্বেও রাজমিস্ত্রি সাধারণ শ্রমিক হওয়াতে জায়গার উপর কুনজর পড়েছে সরকারি কর্মকর্তা নাজমুলের। এমনটাই অভিযোগ মিস্ত্রির পরিবারের।
জীবনকালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রাপ্য সম্পদ চাওয়াতে বহুবার লাঞ্ছিত হন রাজমিস্ত্রি বেলায়ত।সম্মান, সম্পদহানি, অপমান এবং চরম আঘাতের পর আঘাতে শারীরিক মানসিক বিপর্যয় অবস্থায় পদে পদে নানা প্রতিবন্ধকতার স্বীকার হয়।তিলে তিলে সম্পদের শোকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বেলায়তের।স্বার্থ সুবিধায় আঘাতের জেরে অহেতুক মামলায় জড়িয়ে জায়গা দখল করে নিয়েছে বন বিভাগের ফরেস্ট কর্মকর্তা নাজমুল সরকারি ক্ষমতা অপব্যবহার করে। একই জায়গা একই দাগে একই একই মালিকানাস্বত্ব ভিন্ন মালিকের ক্ষেত্রে নেই ঝামেলা, অসুবিধা এবং কোন সমস্যা। কারণ তারা অর্থবিত্ত এবং ক্ষমতাবান।
বেলায়েত হোসেনের ছেলে বাদী আব্দুল আল মামুন বলেন, নাজমুল বন কর্মকর্তা হওয়ার সুবাদে আমার পিতার সাথে কৌশলে সুসম্পর্কের ফাঁদে ফেলে খরিদা সম্পত্তির পাশ দিয়ে জোরপূর্বক বোটানিক্যাল গার্ডেন এর এপ্রোচ রোড তৈরী করার অজুহাতে বাবাকে নানাভাবে হুমকি ধামকি হয়রানি করেছে।
বাদীর পিতার সম্পত্তি জবর দখলের বিচারের নিমিত্তে ১নং আসামী নাজমুলসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, চট্টগ্রাম এ অপর মামলা নং-৩৯/২০১০ দায়ের করেন। গত ১৯/০৬/২০১৯ইং তারিখে উক্ত মামলার রায়ে বিবাদীগণ যাহাতে জোরপূর্বক বোটানিক্যাল গার্ডেন এর এপ্রোচ রোড তৈরী করতে না পারে এবং অনধিকার প্রবেশ করতে না পারে তৎ মর্মে বিবাদীগংদের চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দ্বারা বারণ করার রায় প্রচার করিয়াছেন। ১নং আসামী নাজমুলের নেতৃত্বে বাদী সহ পরিবার ও অন্যান্যদের উপর আক্রমন করে।
উক্ত বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন,তাদের বিরুদ্ধে দুইবার থানায় জিডি এবং জিআর মামলা হয়েছে বন আইনে।এটা নিয়ে অনেকেই বারবার ফোন দিয়েছে, অনেকে জানতে চাইছে। এ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে পক্ষে বিপক্ষে অনেক নিউজও হয়েছে। তাদের নিষেধাজ্ঞা থাকুক যাই থাকুক সেটা আইনগতভাবে সাবমিট করবে।সেটা তাদের ব্যাপার। আইনগতভাবে সেটা আমার সংস্থাকে সাবমিট করুক। আমি ঐইখানে মাত্র ৬ মাস ছিলাম। ১৯ সালে ছিলামও না। আমি সরকারি পাহারাদার কর্মচারী। সরকারি কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য আমার যা যা করার লাগে সবই করবো। একোয়ার হয়েছে একটা ৪৭.৫ শতাংশ এবং আরেকটা ২ শতাংশ। বরাবর বুঝিয়ে দেওয়ার পরেও তারা বুঝতে চাই না। এখানেই তাদের ভুল আছে।
সরকারি সম্পত্তি সুকৌশলে দখলচক্রের অপচেষ্টারীদের দখল করতে দেওয়া হয়নি বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছে। একটা গ্রুপ দখল করতে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা খবর পেয়ে তাদের হাতেনাতে ধরেছি, জেল হাজতে প্রেরণ করছি এবং বন আইনেও মামলা করেছি।
সরকারের পক্ষে আমি কাজ করেছি। ওই জায়গা দখল করার জন্য বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছিল। বনবিভাগ দুর্বল,লোকবল কম,সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দখল করতে চেয়েছিল। আমি যেহেতু রাষ্ট্রের পক্ষে রাষ্ট্রের কর্মচারী রাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করব এটাই স্বাভাবিক।
বায়েজিদ থানার ওসি ফেরদৌস জাহান বলেন,এটা অফিসিয়ালি আদালতের বিষয়। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগকারীকে তার অভিযোগে বক্তব্য শোনার জন্য ডাকা হলে অভিযোগকারী আদালতে হাজির না হওয়ার কারণে আমলে নেওয়া হয়নি খারিজ করে দেওয়া দেওয়া হয় তার অভিযোগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান দায়িত্বশীল চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মালেক বলেন,এটা তো সরকারি জায়গা। সরকারি প্রোটেক দিয়ে প্রোটেক করা ফরেস্টের জায়গা।এটা ডিসির রেকর্ড মূলে জায়গা। ডিসি আমাদেরকে একিউজিশন করে দিয়েছে। সেই মূলে আমরাই মালিক। আমরা পাবলিকের জায়গায় কেন দখলে যাব।
সেটা তো আজকের ঘটনা না সেটাতো ২০০৮ সাল থেকেই এ ঘটনা তখন থেকে তারা ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের লোকদেরকে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে উল্টো হেনস্তা করছে। এটা অফিসিয়ালি বিষয়ে অফিসিয়ালি মীমাংসা হবে। এ বিষয়ে বেশি কথা বলার প্রয়োজন নাই। এটা বিচারাধীন বিষয় কোন অভিযোগ হয়ে থাকলে সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা যা হওয়ার তাই-ই হবে।
উক্ত বিষয়ে ভুক্তভোগী সিআর মামলাসহ দুর্নীতি দমন কমিশন বিভাগীয় কার্যালয় চট্টগ্রাম।জেলা প্রশাসক মহোদয়,চট্টগ্রাম,বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। সাংবাদিকদের কাছে ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্বজনরা উক্ত বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতের রায়ের দ্রুত কার্যকর ও দ্রুত বিচারের স্বার্থে আদালতের প্রতি সম্মান শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। সেইসাথে সত্যের সন্ধানে প্রকৃত অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচনে সঠিক তথ্য উপাত্তে প্রমাণে আদালতে মামলার প্রমাণ সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন।দেশ ও মানুষের কল্যাণে হোক বিজ্ঞ আদালতের রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন। মুক্ত হোক সকলের অধিকার ভুক্তভোগী ও সচেতন মহলের প্রত্যাশা।